রফিক উদ্দিন বাবুল, উখিয়া | শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮
মিয়ানমারে দুই আদিবাসী বৌদ্ধ মাছ ধরতে গিয়ে ফিরে না আসা ও দুই দিন পর গলাকাটা অবস্থায় তাদের লাশ উদ্ধারের অজুহাতে রাখাইনে ফের ক্লিয়ারেন্স অভিযান শুরু করেছে মিয়ানমার সেনা, বিজিপি ও উগ্রুপন্থি রাখাইন জনগোষ্টী। তারা পাড়া মহল্লায় গিয়ে নিরহ রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও ঘরবাড়ী জ¦ালিয়ে দিচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার জের ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বেশ কয়েকজন মাঝির সাথে আলাপ করা হলে তারা এসব তথ্যউপাত্ত জানিয়ে বলেন, উৎপীড়ন, নির্যাতন ও প্রান নাশের আশংকা করে অবশিষ্ট রোহিঙ্গারাও যেকোন সময়ে ধেয়ে আসতে পারে।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ঘুমধুম কোনার পাড়া রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ এঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আদিবাসী বৌদ্ধ জনগোষ্টীরা পরিকল্পিত একটি ঘটনার মাধ্যমে মংডু কোয়ারবিল গ্রামে হামলা চালিয়ে নিরহ রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন শুরু করেছে। সে আরো জানান, কোয়ারবিল থেকে ১০ মাইল পূর্বে বুচিদং এলাকায় মিয়ানমার সেনারা হানা দিয়ে ৫ টি বাড়ীঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে সন্ত্রাসী রাখাইন সম্প্রদায়ের সশস্ত্র যুবকেরা বাড়ীতে, পথেঘাটে রোহিঙ্গাদের মারধর করছে।
রোহিঙ্গা নেতারা জানান, মঙ্গলবারে রাখাইনের পিয়ু মা ক্রিক নামক স্থানে মাছ ধরতে গিয়ে দুই আদিবাসী বৌদ্ধ নিখোজ হয়ে যায়। দুই দিন পর তাদের লাশ উদ্ধারের ঘটনার জন্য তারা রোহিঙ্গাদের দায়ী করে গত বছরের ২৫ আগষ্টের পর থেকে রোহিঙ্গাদের উপর যে বর্বরোচি পৈষাচিক নির্যাতন ঘটিয়েছে আবারো তার পূনরাবৃত্তি শুরু করেছে। যাতে বাংলাদেশ সরকারের আহবানে সাড়া দিয়ে বিশ^জনমত সৃষ্টির মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নসাৎ হয়ে যায়। এবং রাখাইনে থাকা অবশিষ্ট রোহিঙ্গারাও এদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। বালুখালী ক্যাম্পের আনোয়ার মাঝি জানান, রাখাইনের আদিবাসী জনগোষ্টীরা রোহিঙ্গারা সেদেশে ফিরে যায় তা কোন দিনও মেনে নেবেনা। আর্ন্তজাতিক বিশে^র চাপের মূখে রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে সেদেশে ফিরিয়ে নিতে হবে এমন আশংকা করে তারা পরিকল্পিত একটি ঘটনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের উপর আবারো নির্যাতন জ¦ালাও পুড়াও শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন দুই বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, দুই আদিবাসীর গলাকাটা লাশ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমার সেনারা সে দেশে অভিযান শুরু করেছে। তারা শুধু রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামে অভিযান চালাচ্ছে তা নয়। তারা সেদেশে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। এসব কারনে হয়তো আতংকে অবশিষ্ট রোহিঙ্গারা এদেশে পালিয়ে আসার প্রস্তুতি নিতে পারে। সে জন্য সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
Posted ৮:৩১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh