নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৯ জুন ২০১৯
কক্সবাজার থানা পুলিশ শুক্রবার রাতে একটি বড় ধরণের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দলকে আটক করেছে। রোহিঙ্গা শিবিরে এই দলটির সশস্ত্র সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিপক্ষকে খুন-খারাবি, ছিনতাই, রাহাজানি, রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও অপহরণ পুর্বক মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের দলে রয়েছে ১৮ সদস্য। তাদের কক্সবাজার সদর মডেল থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
শিবিরের দুর্ধর্ষ এ রোহিঙ্গার দলটি ধরা পড়ার পর রোহিঙ্গা শিবিরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই রোহিঙ্গা জানান-‘পুলিশের হাতে আটক দুর্ধর্ষ রোহিঙ্গারা এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কুতুপালং শিবির থেকে একটি মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে রাতে বের হয়ে পড়ে। এসব রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা সবাই মিয়ানমার সরকারের সাথে গোপনে হাত মিলিয়ে উখিয়া-টেকনাফের শিবিরে ঘাপটি মেরে প্রত্যাবাসন বিরোধী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল।’ রোহিঙ্গাদ্বয় আরো জানান, আটক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর দল শিবিরে ‘আল ইয়াকিন’ গ্রুপের সদস্য হিসাবে পরিচিত। তাদের হাতেই নিয়ন্ত্রিত রয়েছে মিয়ানমার থেকে চালানে চালানে আসা ইয়াবার বাজারও।
জানা গেছে, মিয়ানমারের ৩৭ টি ইয়াবা কারখানা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় সেদেশের মাফিয়ারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বাংলাদেশের আইন-শৃংখলা রক্ষাকারি সংস্থা সমূহ সীমান্তের ইয়াবা কারবারিদের উপর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রাখায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদেরকেই বাংলাদেশের ইয়াবা বাজার নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়ে চলেছে। সেই থেকেই রোহিঙ্গা শিবিরগুলো ইয়াবার ডিপোতে রুপ নিয়েছে। আটক হওয়া রোহিঙ্গার দলটি শিবির থেকে বের হবার সময় ইয়াবার একটি বড় চালানও সাথে নেয়। যা কক্সবাজার শহরতলির লিংক রোড বাস ষ্টেশনে পুলিশের হাতে আটক হবার আগেই হাত বদল হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের অভিযোগ হচ্ছে যে, পুলিশের হাতে আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের কারনেই সাধারণ রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে পারছে না। আতাউল্লাহ নামের একজন কথিত কমান্ডার এসব রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের প্রধান নেতা হিসাবে কাজ করে থাকেন। আটক হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল জলিলের পুত্র কমান্ডার রশিদুল্লাহ, আবদুস শুকুরের পুত্র ইউনুস, রফিক ও লিয়াকত আলী। তারা সবাই শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের কাছে এক মুর্তিমান আতংক হিসাবে রয়েছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গা এই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দলের সদস্যদের মনোবল চাঙ্গা করার জন্য ঈদ উপলক্ষে প্রত্যেককে ২০/২৫ হাজার টাকা করে ঈদ বখশিস দেয়া হয়েছে। এ টাকায় তারা ঈদ উপলক্ষে এদেশের মানুষের মত করেই শিবির থেকে বের হয়ে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে বেড়াতে বের হয়। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম ও টেকনাফ মহাসড়কের লিংকরোড ষ্টেশন থেকে রাতে পুলিশ তাদের আটক করে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সড়কে এতগুলো চেকপোষ্ট থাকা সত্বেও এসব রোহিঙ্গারা শিবিরের বাইরে কিভাবে বের হয় ?
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার ১৮ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন-‘ তারা কোন না কোন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দলের সক্রিয় সদস্য বলে খবর পেয়েই আমরা তাদের আটক করেছি। তারা কোন উগ্র পন্থায় জড়িত কিনা তা নিশ্চিত হতে তাদের আরো ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিম্যান্ডে আনা হবে।’ #####
Posted ১:৪০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুন ২০১৯
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh