নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২৭ মে ২০১৯
রোহিঙ্গাদের চাল সরবরাহের জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচির (ডাব্লিউএফপি) দেয়া টাকা কক্সবাজার খাদ্য গুদামের কতিপয় কর্মকর্তা কর্তৃক আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রকাশ, কক্সবাজারের খাদ্য গুদাম থেকে প্রতি টন চাল উঠানামায় ২০০ টাকার মধ্যে মাত্র ৯০ টাকা করে শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়। বাদবাকি টন প্রতি ১১০ টাকা খাদ্য গুদামের কতিপয় কর্মকর্তা আতœসাৎ করেন বলে গুদামের শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন। পবিত্র রমজান মাসে শ্রমিকের ঘামের টাকা আতœসাতের অভিযোগটি নিয়ে এলাকায় বর্তমানে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে গতকাল রবিবার জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা দেবদাশ চাকমা। গুদাম শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ করা মজুরির টাকা টেকনাফের খাদ্য গুদামেও কম দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশ থেকে আমদানী করা চাল ৩০ কেজি করে বস্তায় ভরে চট্টগ্রাম থেকে পাঠানো হয়ে থাকে কক্সবাজার জেলা সদর গুদাম এবং উখিয়া ও টেকনাফের খাদ্য গুদামে। চালের বস্তায় প্রায়শ পরিমাণেও অনেক কম থাকে বলেও জানা গেছে। অতি সম্প্রতি ১৩ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানী করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য। এ পরিমাণ চাল প্রতিটি ৩০ কেজির বস্তায় ভরে রোহিঙ্গা শিবিরে সরবরাহের জন্য ২ টি এনজিওকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
গুদাম থেকে আগে বস্তা ভর্ত্তি চাল উঠানামায় টন প্রতি শ্রমিকদের মজুরি দেয়া হত ১০০ টাকা করে। শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল থেকে ডাব্লিউএফপি প্রতি টনে শ্রমিকদের মজুরি দিচ্ছে ২০০ টাকা করে। ডাব্লিউএফপি গুদামের শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের জন্য একজন ঠিকাদারও নিয়োগ দিয়েছে। তবুও খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ উক্ত ঠিকদারকে বাধ্য করে শ্রমিকদের টাকা বিতরণ করা হচ্ছে গুদাম কর্মকর্তাদের তদারকির মাধ্যমে।
কক্সবাজার সদর খাদ্য গুদামের লেবার শ্রমিক সর্দ্দার শাহাবুদ্দিন গতকার অভিযোগ করেছেন-‘ ডাব্লিউএফপি চাল উঠানামার জন্য আমাদেরকে টন প্রতি ২০০ টাকা দিলেও আমরা হাতে পাচ্ছি টন প্রতি মাত্র ৯০ টাকা করে। বাদবাকি ১১০ টাকা গুদামের কর্মকর্তারা জোর করে আমাদের টাকা আতœসাৎ করছেন।’ এ প্রসঙ্গে খাদ্য সরবরাহকারি প্রতিষ্টান ইপসার কর্মকর্তা জানান, ডাব্লিউএফপি শ্রমিকদের টাকা ঠিকমত পরিশোধ করছে। কিন্তু শ্রমিকদের হাতে না পৌঁছার দায়িত্ব ডাব্লিউএফপি’র নয়।
চাল সরবরাহের জন্য শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার মোহনা এসোসিয়েটস এর মালিক সেলিম রেজা এ প্রসঙ্গে বলেন, আমি বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচির চাল উঠানামার শ্রমিক মজুরি টন প্রতি এনে গুদাম কর্মকর্তা ও পরিদর্শকের কাছে এনে দিই। তারাই শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করে থাকেন। তবে কক্সবাজার খাদ্য গুদামের পরিদর্শক রাজিয়া বেগম গতকাল বিষয়টি নিয়ে আমতা আমতা করে জানান-‘ এ সবের সাথে আমি জড়িত নই।’
জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে কক্সবাজার সদর খাদ্য গুদামে ২ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল উঠানামা করা হয়েছে। এ বাবদ শ্রমিকদের ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৭ হাজার টাকা। বাদবাকি ২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা আতœসাৎ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিনের কাছে বার বার মোবাইল করলেও তিনি মোবাইল রিসিভড করেননি। তবে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েই খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করছেন। তিনি অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থাও নিবেন। ####
Posted ১:৫০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ মে ২০১৯
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh