টেকনাফ সংবাদদাতা | রবিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২২
টেকনাফে এক মুক্তিযুদ্ধা পরিবারের পেয়ারা বাগান নিধনের অভিযোগ উঠেছে।
নিধন হওয়া পেয়ারা বাগানের মালিক মুক্তিযুদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মৃত কলিম উল্লাহ মাষ্টার বলে জানাগেছে। তিনি বন বিভাগের একজন ভিলেজার ছিলেন। জীবিত থাকতে তাঁর দখলে থাকা আড়াই একর জমিতে একটি পেয়ারা বাগান সৃজন করেন। বাগানটি হ্নীলা বন বিটের আওতাধীন।
বাগান মালিক সুত্র জানায়, ২০১৮-২০১৯ সৃজিত বাগানে প্রায় ২হাজার পেয়ারা গাছ রোপন করেন। চলতি মৌসুমে বাগানের কিছু কিছু গাছে ফলন আসতে শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় বাগানটি নিধন হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধা পরিবারে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা বাগান নিধনে জড়িত উক্ত বন বিটের ফরেষ্টার দেলোয়ার এবং মুনসী দুলালের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন। পরিবারটি জানান, বিটের লোকজন তাদের কাছ থেকে টাকা দাবী করে আসছিলেন। টাকা না দেওয়ায় আশেপাশের সব ফলজ বাগান অক্ষত রাখলেও আমাদের পেয়ারা বাগানটির সব গাছ কেটে ফেলেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সামাজিক বাগানের অংশীদাররা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,পেয়ার বাগান নিধনের কি দরকার ছিল। অযথা বাড়াবাড়ি করছেন বিটের ফরেষ্টার এবং মুন্সী। তারা বলেন, আশেপাশের সব বাগান আছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধা কলিমুল্লাহর পেয়ারা বাগান উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিধন করা হয়েছে। পরিবেশ সচেতন স্থানীয় মহল বন পাহারায় নিয়োজিত বিটের দুর্নীতিবাজ ফরেষ্টার এবং মুন্সীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে বাগান নিধন কাজে জড়িত শ্রমিক পানখালী ভিলেজার পাড়া এলাকার জয়নাল উদ্দিন,আরমান উদ্দিনের সাথে কথা হয়। এসময় তারা বিটের মুন্সী দুলাল তাদেরকে পেয়ার বাগানটি একেবারে কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। তাই তারা বিট অফিসের নির্দেশে বাগানের সব গাছ নিধন করেছেন বলে দাবী করেন।
ভূক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক টেকনাফ শাখার ব্যাবস্থাপক সানা উল্লাহ জানান, ফরেষ্টার দেলোয়ার তার মুন্সী দুলালের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ২০হাজার টাকা দাবী করেন। তিনি আরো বলেন,নিধনকৃত বাগানের চারিপাশে বিভিন্ন মালিকানাধীন ফলজ বাগান থাকলেও টাকা না পাওয়ায় বিটের ফরেষ্টার ও মুন্সী কেবলমাত্র আমার মুক্তিযুদ্ধা বাবার স্বপ্নের পেয়ারা বাগানটি নিধন করে রাতারাতি কিছু আকাশমনি গাছ রোপন করেছেন। ভুক্তভোগী পরিবার ক্ষতিপূরণসহ অভিযুক্ত ফরেস্টার এবং মুনসীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।
মুন্সী দুলাল জানান,অভিযোগকারী সানা উল্লাহকে বেশ কয়েকবার দেখা করতে খবর পাঠানো হয়। তিনি আজ আসবেন কাল আসবেন বলে কালক্ষেপন করতে থাকেন৷ বিলম্বের কারণে বিষয়টি এমন হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
বিট কর্মকর্তা মোঃ দেলোয়ার হোসাইন জানান,অভিযানের অংশ হিসেবে পেয়ারা বাগানটি নিধন করা হয়েছে। অপরাপর বাগান কেন উচ্ছেদ করা হয়নি প্রশ্নে তিনি বলেন,পর্যায়ক্রমে সব করা হবে। তবে,তিনি টাকা দাবীর বিষয়টি মুন্সীর একান্ত বিষয় বলে মনে করেন।
জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ সরওয়ার আলম বলেন,এত্ত গুলা ফলজ গাছ নিধন করা উচিত হয়নি। তিনি ক্ষতি পুষিয়ে দিতে ক্ষতিগ্রস্থ মুক্তিযুদ্ধা পরিবারকে উপকারভোগীর আওতায় নিয়ে আসবেন বলে জানান। টাকা দাবীর বিষয়ে লিখিত অভিযোগের উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরো জানান,ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৮:১৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২২
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh