বার্তা পরিবেশক | বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০১৯
জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় এবার দালালের কথায় নিষ্কন্টক ফাইল আটকে দিলো এলএ শাখার দায়িত্বরত সার্ভেয়ার আতাউল হক। মহেশখালী শাপলাপুর ইউনিয়নে সাবেক চেয়ারম্যান এড. আবদুল খালেক এই অভিযোগ করেছেন।
এড. আবদুল খালেক জানান, কালামারছড়ায় অধিগ্রহণের আওতায় পড়া জমির ক্ষতিপূরণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পক্ষে আবদুল হাকিম, বাচা মিয়া ও মোস্তাক আহমদ আবেদন করেন। কিন্তু প্রথমে দালাল ছাড়া টাকা উত্তোলন করা যাবে না বলে এলএ শাখা থেকে তাদের সাফ জানিয়ে দেয়া হয়। পরে বাধ্য হয়ে জমির মালিকরা শাপলাপুর কায়দাবাদ এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র দালাল সেলিম উল্লাহর মাধ্যমে গত ১ এপ্রিল আবেদন ফাইল জমা করেন। যার এন্ট্রি নং- ৯৯২, ৯৯৩ ৯৯৪ এবং এলএ মামলা ০৪/২০১৩-১৪ইং)। ৩০% কমিশনে দফারফা করে ১০ হাজার অগ্রীম আদায় করেন দালাল সেলিম উল্লাহ। কিন্তু টাকা নিয়েও দালাল সেলিম উল্লাহ আরো বেশি কমিশন দাবি করে সময় ক্ষেপণ করে। এই নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। নিরুপায় হয়ে নিরীহ জমির মালিকরা শাপলাপুরের সাবেক চেয়ারম্যান এড. আবদুল খালেকের শরণাপ্ন হন।
এ ব্যাপারে এড. আবদুল খালেক বলেন, ওই লোকগুলো নিরীহ, তারা কাগজপত্র কিছুই বুঝে না। দালাল সেলিমের প্রতারণা শিকার হয়ে তারা আমার কাছে প্রতিকার চাইতে আসে। তখন বিষয়টি জেনে আমি গতকাল ৮ মে দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার আতাউল হকের সাথে যোগাযোগ করে ওই ফাইলের হালনাগাদ জানতে চাই। সাক্ষাতের শুরুতেই সার্ভেয়ার আতাউল সাফ বলে দেন দালাল সেলিম ছাড়া এই ফাইলের ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। উল্টো তিনি তেলে-বেগুনে জ¦লে উঠেন। এই নিয়ে সার্ভেয়ার ও আমার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সার্ভেয়ার আতাউল স্পষ্ট বলে দেন দালাল ছাড়া কোনো ফাইলের কাজ হবে না। শেষে ওই ফাইলের ব্যাপারে কোনো কাজ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন সার্ভেয়াল আতাউল হক। তথ্য মতে, বর্তমানে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অধীনে অধিগ্রহণ জমির হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলনের এলএ শাখার কয়েকজন কর্মচারী ও এক শ্রেণির টাউট-বাটপার মিলে গড়ে তুলেছে সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটটি সাধারণ জমির মালিকদের জিম্মি করে রেখেছে। এই কারণে এলএ শাখায় দালাল ছাড়া কোনো ফাইল জমা নেয়া হচ্ছে না। এল.এ শাখা তাদের লালিত নির্দিষ্ট দালাল দিয়ে জমা নেয় ফাইল। তার বিনিময়ে ৩০% পর্যন্ত কমিশন কেটে নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে জমা দেয়া ফাইলের খোঁজ-খবর নিতে গেলে জমির মালিকদের চরম দুর্ব্যবহার করছে দালালেরা। অন্যদিকে দালালদের মাধ্যমে কমিশন নিয়ে তা সুবিধামতো ভাগবাটোয়ারা করে সিন্ডিকেটটি। বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ছিঁচকে দালালদের পাকড়াও করলেও বড় দালালরা থেকে যায় অধরা। ফলে এই অবৈধ কমিশন হাতিয়ে নিয়ে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দালালরা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।
এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হওয়ার কথা জানিয়ে এড.আবদুল খালেক বলেন, এলএ শাখার সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করতে জরুরী ভিত্তিতে এল.এ শাখার সার্ভেয়ার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ত্রৈমাসিক বদলীর ব্যবস্থা করা এবং দুর্নীতি রোধে ক্ষতিপূরণের অর্থ বিতরণ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার শহরে দুর্নীতি কমিশনের একটি ঘূর্ণমান ক্যাম্প স্থাপন করা এবং সর্বোপরি এল.এ অফিসের দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও অভিযুক্ত সার্ভেয়ার আতাউল হকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Posted ১:২৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০১৯
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh