ইয়াছমিন আক্তার | সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
‘নয়নে লাগিল দোলা, কারা যেন ডাকিল পিছে, বসন্ত এসে গেছে।’ ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন । তাই ফাল্গুনের শুরুতেই অপরূপ সাজে সেজেছে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের দুই পাশ। পাহাড় আর সাগরের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া সড়টির দুপাশে গাছে গাছে রং ছড়াচ্ছে পলাশ, শিমুল সহ নানা রঙের বাহারী ফুলে। আমের মুকুল ও বাহারি নানা ফুল শোভা বাড়িয়েছে বহুগুন। গাছে গাছে পাখির কলতান আর মৌমাছির গুঞ্জণ সৃষ্টি করেছে ভিন্ন পরিবেশ। পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে প্রকৃতির এমন রূপ দেখে মুগ্ধ পর্যটকরা। ক্ষণিকের নয়, চিরন্তন ভালবাসাকে স্বরণীয় করে রাখতে অনেক যুগল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি মেরিনড্রাইভের অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করছে। বসন্ত উৎসব উপলক্ষে হোটেল মোটেলগুলো হাতে নিয়েছে পর্যটকদের জন্যে নানা আয়োজনের। কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের জন্যে প্রশাসন থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
‘পলাশ ফুটেছে, শিমুল ফুটেছে, এসেছে দারুন মাস, আমি জেনে গেছি তুমি আসবে না ফিরে, মিটবে না পিয়াস …।’ জনপ্রিয় শিল্পী তপন চৌধুরীর এ গানের কথায় পিয়াস না মিটলেও মেরিন ড্রাইভের দু পাশে গাছে গাছে পলাশ, শিমুল সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও পাখির কলতানে প্রকৃতির পিয়াস মিটছে পর্যটকদের। শীত শেষেরদিকে ফাল্গুনে প্রকৃতি সেজেছে নিজের মতো করে। পর্যটকে মুখরিত দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত সহ মেরিন ড্রাইভ সড়ক। মেরিন ড্রাইভের পাশে ঢেউ গর্জন করে আছড়ে পড়ছে শূন্য বালিয়াড়িতে। আর মেরিন ড্রাইভ সড়কে প্রকৃতি সেজেছে নিজের মতো করে। একপাশে সবুজের সমারোহ নিয়ে উঁচু পাহাড়, আরেক পাশে সমুদ্র। দুই পাশের সারি সারি পলাশ ও শিমুল গাছে ফুটেছে বাহারি রঙের ফুল। মাঝে মাঝে আমের মুকুল ও নানা রঙের ফুল শোভা বাড়িয়েছে বহু গুণ। গাছে গাছে পাখির কলতান আর মৌমাছির গুঞ্জণ সৃষ্টি করেছে ভিন্ন পরিবেশ। প্রকৃতির এমন রূপ দেখে মুখরিত, আনন্দিত পর্যটকরা।
ঢাকার সাভার থেকে আসা দম্পতি মো: সাব্বির ও রেহেনা ইয়াসমিন জানান, কক্সবাজারের সমুদ্রের টানে এখানে আসলেও ফাল্গুনের শুরুতে মেরিন ড্রাইভ রোডের দুইপাশে পলাশ, শিমুল ফুটেছে। যা সমুদ্র এবং পাহাড়ের মাঝাখানে রং ছিটিয়ে দিয়ে অপরুপভাবে সাজিয়েছে। এখানে বসন্ত বাতাসে দোল খেলছে। আর মনে লেগেছে ভালবাসার দোলা। গতবছর মিডিয়ায় মেরিনড্রাইভের এমন সৌন্দর্য্য দেখে এবার কক্সবাজার ছুটে এসেছি।
কক্সবাজার দক্ষিন বনবিভাগ সুত্র জানায়, মেরিনড্রাইভ সড়কে ২০১২-১৩ অর্থবছরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ১০ হাজার চারা রোপন করে। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচুড়া, রাধাচুড়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির এসব গাছে ফুল ফুটে সড়কটি ফুলে ফুলে শুশোভিত হয়েছে। এসব গাছে পাখির কলতান আর মৌমাছির গুঞ্জণ সৃষ্টি করেছে ভিন্ন পরিবেশ। এর ধারাহিকতায় মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়িতে একটি ক্যাকটাস হাউজ, একটি অর্কিট হাউজ ও আরো ৩ হাজার শুভাবর্ধনকারী চারা রোপন করা হচ্ছে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কতর্ৃপক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গেল বছর ৮০ কিলোমিটার এ সড়কে টেকনাফ পর্যন্ত আরো ১০ হাজার শুভাবর্ধনকারী চারা রোপন করেছে কক্সবাজার উন্নয়ন কতর্ৃপক্ষ। যা কয়েক বছর পর প্রকৃতির এই সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পেয়ে বিমুহিত করবে পর্যটকদের।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, ভালোবাসার বহুমাত্রিক রূপ প্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা প্রকাশে হয়তো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে নিজেদের ভালোবাসা মিশিয়ে দিতে কক্সবাজারের ছুটে এসেছে হাজার হাজার দম্পতি পর্যটক। সৈকতের বালিয়াড়ি আর সমুদ্রের লুনা জলে গা-ভাসিয়ে ভালোবাসায় যেনো আত্মহারা অনেকে।
ফুলের দোকানেও লেগেছে ভিড়। তারুণ্যের অনাবিল আনন্দ আর বিশুদ্ধ উচ্ছ্বাসে যেন কমতি নেই পর্যটকদের। করোনা সংকটে সরকারী নির্দেশনা মতে নিয়ম নীতি মেনে পর্যটকদের সেবা দেয়া হচ্ছে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস সহ কক্সবাজারে আগত দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি হয়রানী রোধে সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান ট্যুরিষ্ট পুলিশের কর্মকর্তারা।
আজকের দিনটি যেন বিশ্বের দ্বীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও স্বাস্থ্য শহরে আগত সব বয়সের, সব মানুষের হৃদয়ে প্রগাঢ় আকাঙ্ক্ষা আর মমতা দিয়ে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসায় পুর্ণতা পাবে এমনটা আশা সকলের।
Posted ৬:৫৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh