তারেকুর রহমান | মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২
* রমজানে ফলমূলের চাহিদা বেশি
* তাপদাহে নষ্টের কারণে ফল বেশি না কেনা
* কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেশি দাম
রোজার সময় সব পরিবারেই ইফতারিতে কম-বেশি ফল রাখেন। ভাজা-পোড়ার পাশাপাশি ফল খেয়ে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করেন সব শ্রেণীর মানুষ। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও দামের কারণে ইফতারিতে বিভিন্ন রকমের ফল রাখা সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে। রোজায় ফলের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বেশি বলে জানা যায়।
রমজানে সারাদিন রোজা রাখার পর ভাজা-পোড়া খাবার বাদ দিয়ে শরবত, দই-চিড়া বা বিভিন্ন ফল দিয়ে ইফতার করতে চান বেশিরভাগ মানুষ। তাপদাহে নষ্ট হওয়ার কারণে ফলমূল বেশি করে কিনে রাখা যায় না। সেজন্য প্রতিদিনই ফলের দোকানগুলোতে ক্রেতার চাপ বাড়ে। কিন্তু পছন্দ এবং চাহিদা মতো ফল কিনতে গিয়ে ফল বাজারে আগুনের কারণে বাধ্য হয়ে ফিরে আসেন অনেকে। দামের এই আগুন থেকে নিস্তার চান মানুষ।
বাজারে ফলের কমতি নেই। স্থায়ী দোকান থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লায় ভ্যানে করেও ফল ফেরি করে বেড়ান অনেকে। সেসব ফলের চাহিদাও কম নেই ক্রেতাদের কাছে। বিশেষ করে এই রমজানের সময়। তার ওপর রয়েছে কাঠফাটা রোদ। যেখানে তাপমাত্রা ৩৩-৩৫ ডিগ্রি।
গ্রীষ্মের সময়ে বাজারে রসালো এবং মুখরোচক নানা স্বাদের ফলের অভাব নেই। তরমুজ, আপেল, বেল, বাঙ্গী, কলা, কমলা, মাল্টা, আঙুর, নাসপাতি, ডাব, পেঁপে, বরইসহ আরো কিছু ফলের দেখা মেলে বাজারে। কেবল কিনতে গেলেই দাম শুনে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসতে হয়। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে কেনেন যৎসামান্য।
বর্তমান রোজায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ফলের নাম তরমুজ। অভিযোগ রয়েছে, তরমুজ বিক্রেতা পাইকাররা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে কিনে বিক্রি করছেন দ্বিগুণের চেয়েও বেশি দামে।
বাজারে সরবরাহ যথেষ্ট থাকার পরও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর। ভিন্ন নামে, বিভিন্ন মানের খেজুরের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। একশ টাকার নিচে বাজারে কোনো খেজুর নেই। সর্বোচ্চ খেজুরের কেজি হাজার টাকারও বেশি। যদিও সামনের সপ্তাহে খেজুরের দাম কমে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের কারণে প্রায় সব ফলের দাম বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। রসালো ফল হিসেবে পরিচিত এক কেজি মাল্টার দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা। মাঝারি এক পিস আনারস ৪০-৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। আপেলের দাম কেজি প্রতি ২২০-২৫০ টাকা। কলার ডজন ১৮০ টাকা, সাগর কলা ১৩০-১৮০ টাকা।
শহরের হাসপাতাল সড়কের আনারস ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এবারের রোজায় বেশি বিক্রির আশায় ফল কিনেছিলাম। দাম একটু বেশি হওয়ায় লোকজন আনারস কম কিনছে। এতে মজুদ থাকা আনারস পঁচে যাওয়ার ভয়ে আছি।
পেট্রোল পাম্প এলাকার আলম ফল বিতানের ম্যানেজার আবদুর রহমান বলেন, রমজানে ফলের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তারপরও যারা কিনছেন, তারা সবসময় কেনেন। বেশিরভাগই পরিচিত কাস্টমার। এরা দামের চেয়ে ফলের গুণগতমান বেশি দেখেন। তবে কিছু সাধারণ ক্রেতা কিনতে এসে দাম শুনে আর কিনেন না।’
ফল কিনতে আসা একজন বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, রোজার সময় সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পর ইচ্ছে থাকলেও ফল কিনতে পারি না।
তরমজু কিনতে গেলে দাম শুনে মেজাজটা খারাপ হয়ে যায়। তারপরও ছেলে-মেয়ের আবদারের জন্য বেশি টাকা দাম দিয়ে তরমুজ কিংবা ফলমূল কিনতে হয়।
আরেকজন ক্রেতা সানজিদা বেগম বলেন, ‘প্রতি বছর রোজায় ফলের দাম বেড়ে যায়। অথচ রোজায় দাম কমার কথা। বাজারে এসে ফলের দাম দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। আমার মনে হয় ফল ব্যবসায়ে সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ফলের দাম বাড়িয়ে ফেলে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাম আদায় করার মতো অবস্থা হয়ে পড়ছে। এসব প্রশাসনের নজরদারিতে রাখা উচিৎ।
Posted ১২:০২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh