এফ এম সুমন, পেকুয়া | রবিবার, ১৯ মে ২০১৯
পেকুয়ায় সাগরপথে পাচারকালে ৬৭ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে থানা পুলিশ। পাচারকারীদলের কোন সদস্য বা রোহিঙ্গাদের বহনকারী ফিশিং বোটটি আটক করতে পারেনি পুলিশ। এদের মধ্যে ৩১ জন মহিলা, ১৫ জন শিশু ও ২১ জন পুরুষের অধিকাংশই তরুণ বয়সের। জানাযায়, শুক্রবার রাত ২ টার দিকে পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটককৃত রোহিঙ্গারা সবাই কুতুপালং ও বালুখালী ক্যাম্প থেকে দালালদের সহায়তায় সাগরপথে মালয়েশিয়া চলে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছে তারা।
পুলিশ জানায়, দুর্গম এলাকা হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই পাচারকারী দলের সদস্যরা বোট নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পাচারকারী দলের সদস্যদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, টেকনাফের একটি পাচারকারী দলের সাথে পেকুয়ার একটি পাচার সিন্ডিকেটের যোগসাজসে রাতের আঁধারে রোহিঙ্গাদের পাচারকারী একটি ফিশিং বোট উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চীম উজানটিয়া করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকায় নোঙ্গর করে রোহিঙ্গাদের নামিয়ে দেয়ার সময় স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে পুলিশের কাছে খবর দেয়। পরে পেকুয়া থানার ওসি মো: জাকির হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানাগেছে। আটক রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা স্থানীয় একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতিজন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে কন্টাক্ট করে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল। পথিমধ্যে তারা ধরা পড়ে যায়।
করিমদাদমিয়ার ঘাট এলাকার আব্বাস, শাহজাহান, সোনা মিয়া সহ আরো অনেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পাচারকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলছেনা। দীর্ঘদিন ধরে ওই চক্রটি সাগরপথে রোহিঙ্গা ও ইয়াবা পাচার করে আসলেও প্রশাসন তাদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। তারা জানান, যে ফিশিং বোটটি রোহিঙ্গাদের নামিয়ে দিয়েছে সেটির মালিক জনৈক জসিম উদ্দিন মনু। সে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যে ভগ্নিপতি।
এদিকে কিছুদিন আগে পেকুয়া থেকে বিপুল পরিমাণে ইয়বা আটক ও এখন রোহিঙ্গা আটকের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সচেতন মহল। তারা বলেন, ইয়াবা ও রোহিঙ্গা পাচারকারীরা এখন পেকুয়াকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। এখনি পেকুয়ার সাগর ও রুটে নজরদারী না বাড়ালে এটা মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা।
পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জাকির হোসেন ভূইয়া জানান, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে আমরা পশ্চীম উজানটিয়া করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকা থেকে ৬৭ রোহিঙ্গাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। আটককৃত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৩১ জন মহিলা, ১৫ জন শিশু ও ২১ জন তরুন রয়েছে।” তিনি বলেন, “পাচারকারী দলের সদস্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তবে আমরা তাদের ট্রেস করে আটক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
Posted ১:৪০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৯ মে ২০১৯
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh