তারেকুর রহমান | বুধবার, ০৪ মে ২০২২
টানা ছুটির সাথে ঈদের আনন্দটা উৎসব মুখর করে গড়ে তুলতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ভিড় করেছে পর্যটকরা। ঈদের দ্বিতীয়দিন লাখো পর্যটক সৈকতের বালিয়াড়ি ও ঢেউয়ের তালে তালে নেচে-গেয়ে ঈদ আনন্দে মেতে ওঠে।
ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে বেলা বাড়ার সাথে সৈকত পদচারণায় বেড়েছে দর্শণার্থীর ভিড়। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের পর্যটকের ভিড়ে মুখর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
এর আগে ঈদের দিন সমুদ্রসৈকতে অর্ধ লক্ষাধিক পর্যটক জড়ো হয়েছেন। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট পর্যটকদের এই উপস্থিতি দেখা যায়। ঈদের পরদিন বুধবার থেকে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়ছে।
‘ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ এর ধারণা মতে, এবারের ঈদের ৭ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হবে।
এদিকে বুধবার (৪ মে) বেলা ১১টার দিকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, সীগাল পয়েন্ট, লাবণী পয়েন্ট ও কবিতা চত্বর পয়েন্ট থেকে হাজার হাজার পর্যটক সৈকতে নামেন।
আগত এসব দর্শনার্থী ও পর্যটকরা সমুদ্রস্নান, ঢেউয়ের সাথে টায়ার নিয়ে দুল খাওয়া, নীল জলে সাঁতার, ওয়াটার বাইক রাইডিংসহ প্রিয়জনের সঙ্গে সেফলি তুলে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন।
অনেকে সমুদ্রস্নানে গা ভিজিয়ে বালিয়াড়িতে বালুর সাথে গড়াগড়ি, বীচ বাইক রাইডিং ও ঘোড়াছুটসহ মনের সাথে মিশিয়ে আনন্দে মেতেছেন।
গাজীপুর থেকে সপরিবারে কক্সবাজার আসা তৌফিক মোল্লা বলেন, ‘এবাবের ঈদের ছুটিতে বেড়ানোর জন্য কক্সবাজারকে বেছে নিয়েছি। ঈদের দিন রাতেই বাস ধরে সকালে এসে কক্সবাজার পৌঁছাই আমরা। হোটেল আগে থেকে বুকিং করা ছিল। ৩ দিন থাকবো। আনন্দ করবো পরিবারের সাথে।
কুড়িগ্রাম থেকে আসা তাইফুল কবির বলেন, ‘গত এক বছর আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ২০২২ সালের ঈদটা কক্সবাজার এসে কাটাবো। তাই স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতে চলে এলাম। বরাবরের মতো এখানে এসে অনেক ভালো লাগছে। ঈদের আনন্দটা সাদা বালু ও নীল জলের সাথে সাথে উপভোগ করতে পেরে অনেক অনেক ভালো লাগছে।
হবিগঞ্জ থেকে আসা নতুন দম্পতির প্রথম ঈদ উদযাপন কক্সবাজারে। ঈদের আনন্দটা উপভোগ করতে তারা চলে এলেন পর্যটন নগরীতে। কথা হয় তাদের সাথে। শরীফুল-ইয়াসমিন দম্পতি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে কক্সবাজার আসার আগ্রহ ছিল। অবশেষে এই ঈদে কক্সবাজার আসলাম। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করলাম এবং স্পেশালি ভাজি-ভর্তা দিয়ে ভালো করে খেতে পারলাম। এখানে ঈদের সময়টা ভালোভাবে কাটছে।
এদিকে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৭টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বসে পর্যটকের নিরাপত্তা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, ঈদের প্রথম দিন থেকে সৈকতে পর্যটক ভিড় করতে শুরু করে । সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারাও সৈকত দর্শনে নেমেছেন।
ঈদের দ্বিতীয় দিনে সৈকতে ২ লাখ পর্যটক নেমেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। এদিন সকাল থেকে পর্যটকরা সৈকতে নামতে শুরু করে। পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় আন্তরিক। কোনো অবস্থাতে যাতে অপরাধ ঘটতে না পারে আমরা সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। যারা পর্যটন ঘিরে অপরাধ করার ইচ্ছাপোষণ করে আছে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। এ ব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশ যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। সৈকতে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানিয়েছেন, ঈদের ৭ দিনের ছুটিতে ১০ লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম ঘটবে কক্সবাজারে। ইতোমধ্যে পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউসের ৯০ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে।
এদিকে পর্যটকদের কাছ থেকে যেন কক্ষ ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় না করতে পারে হোটেল মালিকরা সেজন্য ভাড়ার তালিকা টানানোর নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পৃথক ৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত তৎপর থাকবে বলেও জানান তিনি।
Posted ৯:২৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৪ মে ২০২২
ajkerdeshbidesh.com | ajker deshbidesh